শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

৫ দিনের রিমান্ড আবেদন
ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:২৪

অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম নিয়ে কারাসাজি এবং গুজব রটনাকারী চক্রের তিনজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, মো. আমির হোসাইন ওরফে নূর নূরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২) এবং আব্দুল কাইয়ুম (৩৯)। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাঁদাবাজিসহ বাজার অস্থিতিশীল করতে নেতিবাচক ভূমিকা পালনের অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়েছে ডিবি।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (দক্ষিণ) উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শহীদুল ইসলামের নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানানো হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আমির হোসাইনের (ছদ্মবেশী নাম নূর নূরানী) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য দমন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। নুরুল হক হারুন বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের বিভিন্ন সদস্যদের একত্রিত করে কোম্পানিগুলোতে চাঁদাবাজি করত। ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ ও টেলিগ্রামে সব মিলিয়ে ৮-১০টি গ্রুপ চালায় সে। অনলাইনে তার অনেক ফলোয়ার। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের সহ-সভাপতি তিনি। এ পরিষদের নামে তিনি বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেন। আর আব্দুল কাউয়ুম রয়েল ক্যাপিটাল নামক একটি ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। হোয়াটস অ্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে টাকার বিনিময়ে তিনি বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেন।

পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা। যা দেশের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র দীর্ঘদিন ধরে এমন বাজারকে এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ খুলে বিভিন্ন মিথ্যা, ভুয়া এবং প্রতারণামূলক তথ্য সরবরাহ করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে আসছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। এ বিষয়ে বিএসইসি রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। গত ২৫ এপ্রিল রমনা থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। এই মামলা নং ১৬। ওই মামলায় শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করে।

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, আটককৃতরা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। একই সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে তারা চাঁদা দাবি করত। আর কোম্পানি দাবিকৃত চাঁদা না দিলে অন-লাইনে নানাভাবে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করত।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন শেয়ার নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে দাম বৃদ্ধি করেছে। তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চমূল্যে শেয়ার বিক্রি করে প্রতারণা করেছে। এ সব করার জন্য গোপনীয় হোয়াটস্যাপ/টেলিগ্রাম গ্রুপ ব্যবহার করত। গ্রুপ-মেম্বার হতে সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদান করা লাগত। আবার শেয়ারে লাভ হলে লাভের অংশও তাদের দিতে হয়। তবে লোকসান হলে তারা দায়িত্ব নেয় না। যেখানে বিএসইসির আইন অনুযায়ী যেকোনো শেয়ারের মূল্য নিয়ে তথ্য আদান-প্রদান সম্পন্ন অবৈধ। তা সত্ত্বেও তারা এই কাজগুলো গোপনে করত।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে সর্বদা কাজ করে চলেছে। এ বিষয়ে নিয়মিতভাবে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো নিয়মিত মনিটরিং এবং সাইবার পেট্রোলিং পরিচালিত হচ্ছে। পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উসকানি দিয়ে কেউ যাতে স্বার্থ হাসিল করতে না পারে সে বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা সংশ্লিষ্ট ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। এ ছাড়া তারা আরও বেশ কয়েক জনের নাম জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, যারা পেছন থেকে নেপথ্যের কারিগর হিসেবে কাজ করে থাকে। আশা করছি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।


৯০০ লাশ দাফনের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ মিল্টন সমাদ্দার

রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৯ মে, ২০২৪ ১৬:১১
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার ৯০০টি লাশের দাফনের ব্যাপারে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি বরং স্বীকার করছেন মানুষের সহানুভূতি এবং টাকা পাওয়ার জন্য লাশের সংখ্যা বাড়িয়ে বলে ফেসবুকে তিনি ভিডিও দিতেন। এমনকি তার নিজেরই স্বীকার করা ১৩৫টি লাশ তিনি তিনি কোথায় দাফন করেছেন সে ব্যাপারেও কোনো তথ্য দিতে পারেননি। প্রয়োজনে তাকে আবারও রিমান্ডে আনব।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকলে এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।

ডিএমপির ডিবিপ্রধান বলেন, ‘৯০০ লাশ দাফন করা হয়েছে এমন ভিডিও মিল্টন মানুষের সহানুভূতি ও টাকার জন্য করেছে। আমরা তার কাছে ৯০০ লাশ কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে সেটি জানতে চেয়েছি। পরে সে নিজের মুখে ১৩৫টি লাশ দাফনের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু সেসব লাশের ব্যাপারেও কোনো ধরনের প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। এগুলো আমরা আরও তদন্ত করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনাথ-অসহায় মানুষের এসব ভিডিও ফেসবুকে দিয়ে সে মানুষের বিবেকে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আর মানুষজনও তাকে বিশ্বাস করে বিকাশ-নগদের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এই আশ্রমে কোনো ডাক্তার সে রাখেনি। উল্টো সে নিজেই বিভিন্ন অপারেশন করতো। তখন মানুষজন আর্তনাদ করলে সে পৈশাচিক আনন্দ ভোগ করতো। সবকিছুই আমরা বের করেছি। আমাদের আরও কিছু তথ্য জানার বাকি আছে।’

হারুন বলেন, ‘সমাজে এ ধরনের কাজ আরও যারা করছেন তাদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমরা দেখেছি মানুষের কাছ থেকেই কোটি কোটি টাকা এনে নিজের অ্যাকাউন্টে রেখে দিয়েছে। কারা তাকে সহযোগিতা করেছে সেসব বিষয়েও আমরা বের করব।’

বিষয়:

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী খুনের মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৯ মে, ২০২৪ ১৪:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢালিউডের সোনালি যুগের চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় করা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাদিয়া আফরিন শিল্পী দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য জানান।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আবদুল আজিজ, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২৫ বছর আগে খুন হওয়ার পরের বছর আশীষ রায় চৌধুরীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযুক্ত এ মামলার ৯ আসামির মধ্যে পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। কারাগারে আছেন সানজিদুল ইসলাম ইমন। জামিনে আছেন আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, তারিক সাঈদ মামুন ও ফারুক আব্বাসী।

পলাতক আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আবদুল আজিজ, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, সেলিম খান ও আদনান সিদ্দিকী।

২০০১ সালে বিচার শুরুর আদেশ হয়। এক আসামি ওই আদেশ চ্যালঞ্জ করে উচ্চ আদালতে গেলে আটকে যায় বিচারকার্য। এরপর উচ্চ আদালতের আদেশে আবার বিচারকার্য ২০২২ সালে শুরু হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যানুযায়ী, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্প ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ট্রাম্প ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে উঠে আসে আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম।

আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও সোহেল চৌধুরীর মধ্যে বিরোধ ছিল। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মির্জা মাহাফুজ আদালত ও পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবে যান তিনি। তখন ক্লাবে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ তার স্ত্রীকে গান গাইতে বলেন। অন্যদিকে সোহেল চৌধুরী ও তার কয়েক বন্ধু গান থামাতে বলেন। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী ও তার দলের লোকজন মাহাফুজের টেবিলের সামনে আসেন। তখন তারা আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পাশে বসা এক নারীকে উঠে আসতে বলেন। ওই নারী না উঠলে সোহেল চৌধুরী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে যান।

সোহেল চৌধুরীকে কীভাবে গুলি করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে অভিযোগপত্রে বলা হয়, সেদিন সোহেল চৌধুরী ক্লাবে ঢুকতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে ক্লাবে ঢোকার অনুমতি না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে রাত ৩টার দিকে সোহেল চৌধুরী আবার ক্লাবের সামনে আসেন। তখন পেশাদার খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

বিষয়:

রাজধানীর আফতাবনগরে পশুর হাট বসানো যাবে না: হাইকোর্ট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় পশুর হাট বসানোর ইজারার বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। ফলে কোরবানির ঈদে আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসানো যাবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক ও অ্যাডভোকেট এস এম শামীম হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

এর আগে আফতাবনগরে গরুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ওই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ আইনের ধারায় তফসিল অনুযায়ী আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) বাড্ডা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড অধীন, যা ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অন্তর্ভুক্ত। এটি একটি সুপরিকল্পিত আবাসিক এলাকা।

প্রসঙ্গত, ৪ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ঈদুল আজহা ২০২৪ উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেন। ওই বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিটটি আনা হয়। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান ভূমি অফিসারসহ নয়জনকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।


নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের জঙ্গি গ্রেপ্তার

অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট কতৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর গ্রেপ্তারকৃত সক্রিয় সদস্য মো. মনির হোসেন শেখ (৩০)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। তার নাম মো. মনির হোসেন শেখ (৩০)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার এটিইউর পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) মাহফুজুল আলম রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার দক্ষিণ গোলাকান্দাইল এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে উগ্রবাদী কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

গত ২ মার্চ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে এটিইউ। তাদের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় মামলা করা হয়। পরে গ্রেপ্তার আসামি আলী আকবর জনি আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মো. মনির হোসেন শেখ এর সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার মনির হোসেন শেখ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য। তিনি ও তার সহযোগীরা জনমনে ত্রাস ও ভীতি সৃষ্টি করে দেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলেন। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিষয়:

সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টের রুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান এবং বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চে রুল জারি করেন। আদালতে গতকাল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

রুলে সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধে (ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ ছাড়া) ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ দেওয়ার বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে সাত দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী সংগঠন, পরিবেশ বিজ্ঞানী, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সাত দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সাত দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী সংগঠন, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারে সমন্বয়ে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না; কমিটি গঠন হওয়ার আগ পর্যন্ত সব বিবাদীদের নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয়, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

দুই সপ্তাহের মধ্যে কেবিনেট বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার দুই সিটি মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিটের বিষয়ে সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সম্প্রতি তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি ও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে মর্মে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে এ রিট করা হয়।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট পিটিশন করেন আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, মো. এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং রিপন বাড়ৈ।

রিটে এইচআরপিবির পক্ষে দাবি করা হয়, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতি তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। যে কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

সামাজিক বনায়ন চুক্তিতে সারা দেশে লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে, যা বন্ধ না হলে দেশে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে এবং মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রিটে যেসব নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে:

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে সাত দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিজ্ঞানী, প্রফেসর, পরিবেশ বিজ্ঞান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেসর পরিবেশ বিজ্ঞান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একটি সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করবে।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সাত দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সাত দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারে সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগ পর্যন্ত সব বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যেন কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ চাওয়া হয় এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট দাখিল নির্দেশনা চাওয়া হয়।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪-এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ দেওয়ার বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।


কিরগিজস্তানে চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়েছেন তারা

গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের মামলায় তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন, ইব্রাহীম মল্লিক নাহিদ (৩৫), শারমিন হোসেন লাবনী (৩৬) ও আরিফুর রহমান সাদী (২৪)।

সিআইডি বলছে, তারা মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য। মানব পাচারকারী চক্রটির প্রধান ইব্রাহীম মল্লিক নাহিদ জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক এবং অন্য দুজন তার সহযোগী। তারা কিরগিজস্তানে ভালো বেতন ও সুবিধাসহ চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। গতকাল ৬ মে রাজধানীর পল্টন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, সম্প্রতি কিরগিজস্তানে কার ওয়াশিং ভিসায় লোক নিয়োগের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে বিজ্ঞাপন দেয় জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। বিজ্ঞাপন দেখে রিকশাচালক মোহাম্মদ সোনা মিয়া, মো. আকাশ শেখ ও মো. আকতার সরদার নামে ফরিদপুরের ৩ ব্যক্তি এজেন্সিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে কিরগিজস্তানে ভালো বেতন ও সুবিধায় চাকরি নিয়ে কিরগিজস্তানে যাওয়ার জন্য জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে গরু, রিকশা, ঘর বিক্রি করে ভুক্তভোগী ৩ জন ৫ লাখ করে টাকা দেন। এজেন্সিটি তাদের কিরগিজস্তানের ভিসা ও বিমান টিকিট দেয়।

গত ৭ এপ্রিল কিরগিজস্তানে যাওয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা ভিসার কপি ও বিমান টিকিট নিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। তবে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ অনলাইনে তাদের ভিসার কোনো তথ্য না পেয়ে তাদের যাত্রা স্থগিত করে। পরবর্তীতে তারা জান্নাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোনো সদুত্তর না পেয়ে গত ২২ এপ্রিল মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে পল্টন থানায় তারা মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি আরও জানায়, মামলা তদন্তকালে জানা যায়, গ্রেপ্তার আসামিরা এর আগে যাদের অভিবাসী কর্মী হিসেবে কিরগিজস্তানে পাঠিয়েছে তাদের অধিকাংশই সেখানে মানব পাচারের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। মামলাটির তদন্ত অব্যাহত আছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে আরও একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

বিষয়:

‘আইনজীবীদের নৈতিক মানদণ্ড রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে’

গতকাল সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত সেমিনার উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৭ মে, ২০২৪ ১৩:১২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আইনপেশা পরিচালনায় আইনজীবীদেরকে তাদের পেশাগত নৈতিক মানদণ্ড রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত ‘আইন পেশার আদর্শ ও নৈতিকতা’ এবং ‘বিচারিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনার উদ্ভোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘পেশাগত নৈতিকতা ও মূল্যবোধের যথাযথ অনুশীলন আইন পেশার মূলভিত্তি। যদি পেশাগত মূল্যবোধের অনুশীলন ব্যতিরেক আইন চর্চা করা হয়, তবে বিচারাঙ্গন পরিণত হবে নিছক কাঠ-পাথরের কিছু স্থাপনায়। যদি বিচারাঙ্গনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আইনজীবীরা আইনপেশা পরিচালনায় পেশাগত নৈতিক মানদণ্ড রক্ষায় যথাযথ গুরুত্ব প্রদান না করেন তাহলে মানুষের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার যে মহান উদ্দেশ্য নিয়ে দেশের বিচারালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, মহান সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হবে।’

ওবায়দুল হাসান বলেন, সমাজের সবচেয়ে অসহায় মানুষরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আদালতে আসেন, আইনজীবীদের দ্বারস্থ হন। এই অসহায় মানুষগুলোকে আইনি সেবা প্রদানের যে নৈতিক দায়িত্ব আইনজীবীদের রয়েছে, সেই দায়িত্ব পালনে সবাইকে মানবিক হতে হবে। আইনজীবী হিসেবে সাফল্য কেবল মামলার জয়-পরাজয়ের নিক্তিতে মাপলেই চলবে না, বরং আদালতে আইনের ব্যাখ্যা প্রদানে কতটা মানবিকতা ও উদারতার পরিচয় দিচ্ছেন কিংবা মামলায় জয় লাভের তুলনায় ন্যায় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে কি-না এই বিষয়গুলোই কিন্তু একজন সত্যিকারের আইনজীবী হিসেবে অন্যদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেবে।

তিনি বলেন, একজন আইনজীবীর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব মক্কেলের গোপনীয়তা রক্ষা করা। উন্নত দেশ গুলোতে এই বিষয়টা যতটা গুরুত্বসহকারে দেখা হয়, আমরা ততটা গুরুত্ব প্রদান করি না। কিন্তু আমাদের এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। মামলা পরিচালনাকালে আইনজীবীরা আদালতকে সঠিক গাইড করবেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীরা আদালতের অফিসার হিসেবে ভূমিকা রাখবেন।

প্রধান বিচারপতি আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘আইনজীবীরা নির্দিষ্ট একটি পরিসরে তাদের পেশাগত কার্যক্রম পরিচালনা করেন বিধায় এখানে প্রতিযোগিতা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু এই প্রতিযোগিতা যেন হয় সুস্থ্য। আইনি প্রতিযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। ক্লায়েন্ট বা মামলা নিয়ে হোক বা ব্যক্তিগত বা পেশাগত প্রতিহিংসার কারণে হোক, আইনাঙ্গনে নিজেদের মধ্যে কদর্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবেন না। আইন যতই নিরস হোক না কেন আইন পেশা পরিচালনাও একটা শিল্প। এই শিল্পের সৌন্দর্য যেন মলিন না হয় সেদিকে আইনজীবীদের খেয়াল রাখতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট বার এই সেমিনারের আয়োজন করে। সুপ্রিম কোর্ট বার এর শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক সিনিয়র এডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হকের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল সেশনে বক্তা ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দার। এ ছাড়া সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে এটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এ এম আমিন উদ্দিন আলোচনায় অংশ নেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টের প্রয়াত ও বিশিষ্ট আইনজীবীদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এই সময় সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, বার এর সাবেক সভাপতি প্রয়াত আবদুল বাসেত মজুমদার, মাহবুবে আলম, মইনুল হোসেন, আব্দুল মতিন খসরু, এ জে মোহাম্মদ আলী, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকসহ প্রয়াত আইনজীবীদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানান।


মিল্টনের বিষয়ে ভয়াবহ-লোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে পুলিশ: হারুন

`চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৬ মে, ২০২৪ ১৯:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের বিষয়ে পুলিশ অনেক ভয়াবহ-রোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গতকাল রোববার তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’আশ্রমে বর্তমানে ৪৫ জন শিশু আছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। পরে তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ। শুনানী শেষে মানব পাচার আইনে করা মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার মিল্টনকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

ওই আদেশের এক দিন পর আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান।

ডিবি প্রধান বলেন, ‘তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে বিভিন্ন মানুষকে প্রতারিত করে বৃদ্ধ, অনাথ এবং যারা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন মানুষদের পুঁজি করে তিনি যে টাকা কামাচ্ছিলেন, এই টাকাগুলো তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই জমা হচ্ছিল। তিনি কিন্তু এসব টাকা ওই আশ্রিত মানুষের পেছনে খরচ করছিলেন না, চিকিৎসা দিচ্ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক তথ্য আমরা পেয়েছি, যা ভয়াবহ, লোমহর্ষক তথ্য। তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষ না করে কিছু বলা ঠিক হবে না।’

তিনি বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে থাকা অনাথ শিশু, বৃদ্ধ, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আমাদের কাছে গতকাল এসেছিলেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমের পুরো দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। সব খরচ তিনি বহন করবেন। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের আশ্রিত গরীব, অসহায় মানুষগুলোকে সেবা সেখানেই দেবে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। আপাতত এটা চলবে। পরে অন্য চিন্তাভাবনা করবো।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার মাদকসেবী এবং তিনি ইয়াবা সেবন করেন। নিজেই ইয়াবা সেবনের কথা স্বীকার করেছেন। তার টর্চার সেলে অত্যাচারের মাত্রা ছিল অমানবিক। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের এভাবে কেউ পেটাতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, তার আশ্রমে যারা মারা গেছেন, তাদের ডেথ সার্টিফিকেট নিজেই দিতেন, ডাক্তারের সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করতেন। তাদের কোথায় কবর দেওয়া হলো, সে তথ্য তিনি আস্তে আস্তে স্বীকার করা শুরু করেছেন। তদন্ত শেষ হলে এব্যাপারে জানানো হবে।

মিল্টন সমাদ্দারকে গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে আটক করে ডিবি। পরের দিন বৃহস্পতিবার মিরপুর মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। মামলায় মিল্টনের সহযোগী কিশোর বালা নামে একজনকেও আসামি করা হয়। এ মামলায় ২ মে মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ কামাল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

বিষয়:

ঢাকায় পাঁচ দিনের সফরে আইওএম’র মহাপরিচালক

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় পাঁচ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপ। আজ রোববার ঢাকার হযরত শাহজালাল (রাঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান আইওএম'র বাংলাদেশ প্রধান আবদুস সাত্তার ইসোভ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

পাঁচ দিনের সফরে অ্যামি পোপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মঙ্গলবার ঢাকায় আইওএম এর বার্ষিক অভিবাসন বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন অ্যামি পোপ। আর আগামী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সফর শেষে ঢাকা ছাড়বেন আইওএমের এ মহাপরিচালক।

২০২৩ সালের ১ অক্টোবর আইওএম মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়া অ্যামি পোপের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশি অভিবাসী ও বাংলাদেশে আটকে পরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে নিবিড়ভাবে কাজ করছে আইওএম।


অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আজ সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আজ রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- ১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন। ২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন- যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না। ৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না। ৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। ৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’


ব্লেড দিয়ে মানুষের হাত-পা কেটে ‘অস্ত্রোপচার’ করতেন মিল্টন সমাদ্দার: ডিবিপ্রধান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতারণা ও নানা অনিয়মে গ্রেপ্তার হওয়া ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দার মানুষের হাত-পা কেটে নিজেই ‘অস্ত্রোপচার’ করতেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

আজ রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।

মিল্টন ৯০০ মরদেহ দাফন করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালালেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ১০০ মরদেহ দাফনের কথা স্বীকার করেছেন বলেও এ সময় ডিবিপ্রধান জানান।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘‘বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে যাদের শরীরের কোনো অংশ পচে যেত, সে অংশগুলো তিনি ছুরি ও ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলতেন। এমন বেশ কয়েকজন বৃদ্ধের তিনি হাত, পা ও আঙুল কেটে ফেলেন। সে সময় তাদের কান্না, যন্ত্রণা ও রক্ত দেখে মিল্টন পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করতেন। তিনি কখনোই অসুস্থ ব্যক্তিদের কোনো হাসপাতালে নিতেন না। মিল্টনের ‘অস্ত্রোপচার কক্ষে’ শুধু কয়েকটা ছুরি ও ব্লেড পাওয়া গেছে। এখানে তিনি নিজেই ‘অস্ত্রোপচার’ করতেন।’’

তিনি বলেন, ‘মিল্টনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এখনো ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আছে। তিনি মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষের দাফন, বৃদ্ধ, বাক্প্রতিবন্ধী, অসহায় মানুষের আশ্রয়ের কথা বলে টাকা সংগ্রহ করতেন। কবর দেওয়ার সংখ্যা যত বেশি, টাকা সংগ্রহ তত বেশি হতো।’

‘মিল্টন সমাদ্দার একজন মাদকাসক্ত ও সাইকোপ্যাথ মানুষ। টর্চার সেলে তিনি মানুষকে পিটিয়ে নিস্তেজ করতেন। তিনি কীভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা হলেন, তা বোধগম্য নয়’- যোগ করে বললেন ডিবিপ্রধান।

এদিকে মানব পাচার আইনে করা মামলায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’-এর চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিন আশ্রমের মৃত ব্যক্তিদের জাল মৃত্যু সনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মিল্টনের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর বৃহস্পতিবার (২ মে) মিরপুর মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। মামলায় মিল্টনের সহযোগী কিশোর বালা নামে একজনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় বৃহস্পতিবার (২ মে) মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।

এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন ডিবির এসআই কামাল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মানব পাচারের অভিযোগে বুধবার (১ মে) রাতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মিরপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন ধানমন্ডির বাসিন্দা এম রাকিব (৩৫)।

সম্প্রতি কিছুদিন ধরে মিল্টনের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছিল। মিল্টন ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকজন তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।

পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মিল্টন সমাদ্দার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা। জালিয়াতির মাধ্যমে চিকিৎসক সেজে মৃত ব্যক্তির সনদ দেওয়াসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মিরপুর থানার পুলিশ।


‘আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে দেশের জনগণের কথা চিন্তা করতে হব’

রোববার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২৪-২৫ এর খসড়া চূড়ান্তকরণ বিষয়ক কর্মশালায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সবসময় দেশের জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে এবং জনবান্ধব আইন প্রণয়ন করতে হবে।

আজ রোববার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২৪-২৫ এর খসড়া চূড়ান্তকরণ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, বিশেষ কারও চোখের দিকে তাকিয়ে কিংবা কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা করে ভালো আইন তৈরি করা যায় না। তাই যে-যাই বলুক, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সবসময় দেশের জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে এবং জনবান্ধব আইন প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য উভয়ই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, লেজিসলেটিভ কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি লেজিসলেটিভ ক্যাডার সার্ভিস গঠনের বিষয়েও কাজ করতে হবে।

আনিসুল হক বলেন, “লজ অব বাংলাদেশ’ লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের খুবই জনবান্ধব একটি কাজ। এর মাধ্যমে জনগণ মুহূর্তেই বাংলাদেশে প্রচলিত সকল আইন দেখে নিতে পারেন। এখন ‘লজ অব বাংলাদেশ’ এর আলোকে ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে জারিকৃত সকল এসআরও এবং অন্যান্য বিধি-বিধানের সংকলনে অনলাইন ভিত্তিক ‘রুলস অব বাংলাদেশ’ তৈরি করা গেলে জনগণ খুবই উপকৃত হবে। এটি খুব তাড়াতাড়ি তৈরি করতে হবে।”

লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় আইন ও বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।

বিষয়:

মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন

‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ এর চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মানবপাচার আইনে করা মামলায় ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ এর চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে চার দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রথমে তার বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনের মামলায় প্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

আশ্রমের মৃত ব্যক্তিদের জাল মৃত্যু সনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে, গত বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বৃহস্পতিবার ২ মে মিরপুর মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। মামলায় মিল্টনের সহযোগী কিশোর বালা নামে একজনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় বৃহস্পতিবার মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন ডিবির এসআই কামাল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বিষয়:

banner close